হঠাৎ রাতে না.গঞ্জ ডিসি অফিসে আ.লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা
গত বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক পৌনে ৭টা। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চত্বরে তেমন কোনো লোকজন নেই। এ সময় সেখানে আসা দামি ব্রান্ডের কয়েকটি গাড়ি থেকে একে একে নামেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কয়েক শীর্ষ নেতা।
আর একে একে সেখানে আসেন পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তাও। হঠাৎ অনির্ধারিত এ আগমনের সংবাদ পৌঁছে যায় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে।
প্রায় সোয়া ১ ঘণ্টার বৈঠক শেষে নিচে নেমে আসেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম। খবর: যুগান্তর।
এ বৈঠককে ঘিরে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তুলেছেন স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার।
জাহাঙ্গীর কবির নানক নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মেয়রপ্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী। গত রোববার সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী লীগের এক কর্মিসভায় তৈমুর আলম খন্দকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘তৈমুর সাহেব ঘুঘু দেখেছেন, ঘুঘুর ফাঁদ দেখেননি। টের পাবেন আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। যে আশায় রয়েছেন, সেই আশায় গুড়ে বালি।’
ওই ঘোষণার দুদিন পর সিদ্ধিরগঞ্জের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম। ওই সময় তৈমুর অভিযোগ করেন, নানক সাহেব ঘুঘু দেখানোর ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে তিনি ঘুঘু ও ঘুঘুর ফাঁদ দেখা শুরু করেছেন।
সেখানে জাহাঙ্গীর কবির নানক গণমাধ্যম কর্মীদের বলেছেন, এখানে সন্দেহের কোনো কারণ নেই। আমরা আজকে এখানে কোনো গোপন বৈঠক করিনি। প্রধান ফটক দিয়েই ঢুকেছি এবং প্রধান ফটক দিয়েই বের হচ্ছি। ফলে এখানে লুকোচুরির কোনো বিষয় নেই। আমরা বিশ্বাস করি নির্বাচনটি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ এবং আনন্দ উৎসব ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
নানক আরও বলেন, দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা একটি দল করি, দলের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে আছি। আমরা তো আসতেই পারি জেলা প্রশাসকের কাছে আলাপ করতে। যেন একটি সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়। কোনোভাবেই যেন নারায়ণগঞ্জের শান্তি ভঙ্গ না হয়। এ ব্যাপারে তো আমরা আবেদন রাখতেই পারি।
আর এ হঠাৎ বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় তৈমুর আলম খন্দকার সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ‘নারায়ণগঞ্জের ভোটার না, তাঁরা ঢাকার মেহমান। তাঁরা মেহমানদারি করতে এসে নির্বাচনকে প্রভাবিত করছেন। তাঁরা প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে ঘুঘুর ফাঁদ দেখাচ্ছেন। প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ পাঠাচ্ছেন। তাঁদেরকে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে। এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন। তাঁরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সমাবেশ করছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাঁদের ব্যাপারে অন্ধ।’
আর এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানিয়েছেন, উনাদের সঙ্গে কোনো নির্ধারিত সভা ছিল না। উনারা এসেছিলেন কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের বিষয়ে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি নির্বাচন যে কোনো মূল্যে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করা হবে।