ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শতবর্ষী অজ্ঞাত বৃদ্ধার মৃতদেহ দাফন কাজ করলো ‘স্বজন’।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিচয়হীন অজ্ঞাত বৃদ্ধার (১০০বছর) দাফন কাজের মাধ্যমে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া কার্যক্রম শুরু করেছে ‘স্বজন’ নামের মানবিক সংগঠন।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে ‘স্বজন’ এর উদ্যোগে দাফনকাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।
আজ দুপুরে সংগঠন এর প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা জহিরুল ইসলাম জুম্মান, প্রধান কার্যনির্বাহী সদস্য ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এড. মাসুম বিল্লাহ্ ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংগঠনের কার্যনিবার্হী সদস্য শাহাদাৎ হোসেন শোভন অজ্ঞাত বৃদ্ধার মরদেহ খোঁজ নেন। লাশ দাফন কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে সব ধরনের সহযোগিতা জন্য এগিয়ে আসেন। বিকেলে জানাযা শেষে দাফনকাজ সম্পূর্ণ করা হয়।
সংগঠনের উদ্যোক্তা জহিরুল ইসলাম জুম্মান জানান, আজ দুপুরের মধ্যে অজ্ঞাত বৃদ্ধার পরিবারের কোন আত্নীয়-স্বজন না আসায়, ‘স্বজনের’ মাধ্যমে অজ্ঞাত বৃদ্ধার দাফনকাজ সম্পূর্ণ করা সিদ্ধান্ত নেয়৷ বিকেলে সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বিপি হাসান সারোয়ার ও প্রধান কার্যনির্বাহী সদস্য এড. মাসুম বিল্লাহ্সহ স্বেচ্ছাসেবী সদস্যদের মাধ্যমে বৃদ্ধাকে গোসল করিয়ে কাফনের কাপড় পড়ানো হয়। পরে হাসপাতাল চত্ত্বরে জানাযার নামায শেষে পূর্ব মেড্ডা তিতাস নদীরপাড়ের গোরস্থানে দাফন করা হয়।
প্রধান কার্যনির্বাহী সদস্য এড. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে আসা লাশ গুলোর মধ্যে অজ্ঞাত ও পরিচয়হীন যে লাশ থাকবে ঐ লাশের কবর কুড়া-গোসল, কাফনের কাপড় থেকে শুরু করে জানাযার পর কবরস্থানে দাফন কাজ সম্পূর্ণ করা পর্যন্ত কাজটি করবে মানবিক সংগঠন ‘স্বজন’। আজকে অজ্ঞাত বৃদ্ধার লাশ দাফনকাজের মাধ্যমে প্রাথমিক ভাবে কার্যক্রম শুরু করলাম।
‘আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম’ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক চমন সিকান্দার জুলকারনাইন বলেন, অজ্ঞাত ও পরিচয়হীন ব্যক্তির লাশ দাফনকাজ করার জন্য ‘স্বজন’ নামের সংগঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানায়। অজ্ঞাত মৃতদেহের দাফনকাজ করার জন্য স্বজনের জন্য সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।
তাছাড়া ‘স্বজন’ এর কার্যনির্বাহী সদস্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ডোম ইনচার্জ আশরাফুল ইসলাম সুমন ও দৈনিক যায়যায় কালের জেলা প্রতিনিধি ইঞ্জিনিয়ার মো. আজহার উদ্দিনসহ স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে আব্দুর রহমান, হাফেজ রাকিবুল ইসলাম, আরমান আদনান, হাফেজ জুবায়ের, হাফেজ মুহাম্মদ, রায়হান উদ্দিন রাব্বানী, হাফেজ সানাউল্লাহ, আলাউদ্দিন, কামাল মিয়া, তনয় আহমেদ ও এম্বুলেন্স চালক হানিফ প্রমূহ।
বিকেলে আসর নামাযের পর হাসপাতাল চত্ত্বরে জানাযার নামায সম্পূর্ণ হয়৷ সদর হাসপাতাল জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আনোয়ার শাহ জানাযার নামায পড়ান৷ বিকেলে জানাযা শেষে দাফনকাজ সম্পূর্ণ করা হয়।
উল্লেখ্য যে, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে সার্জারী বিভাগে একজন অজ্ঞাত বৃদ্ধা(১০০) ১০দিন চিকিৎসার পর গতকাল রাতে মারা যায়। ওই বৃদ্ধা শহরের রেলওয়ে বস্তিতে একটি ঘরে থাকতেন। ওইখান থেকে সাদ্দাম হোসেন নামে এক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে ছিলেন। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর হাসপাতালে মারা যায়। শেষ পর্যন্ত বৃদ্ধার আত্নীয়-স্বজনের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে আজকে বৃদ্ধার দাফনকাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে।