জাপানে আত্মহত্যা ঠেকাতে বিশ্বে প্রথম একাকিত্ব মন্ত্রী নিয়োগ!
জাপানে আত্মহত্যার প্রবণতা করোনা মহামারির চেয়েও ভয়ংকর হয়ে উঠছে। এই প্রবণতা কমাতে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে দেশটিতে।
‘মিনিস্টার অব লোনলিনেস’ কিংবা ‘একাকিত্ব মন্ত্রীর’ কাজ হবে মানুষের মন ভালো রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। দেশটির প্রথম একাকীত্ব মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তেতশুশি সাকামতো। তিনি দেশের জন্মহার হ্রাস মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করার পাশাপাশি এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপালন করবেন।
জাপান টাইমস জানিয়েছে, চলতি মাসের প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা তার মন্ত্রিসভায় একাকীত্ব মন্ত্রী নিয়োগ দেন। যুক্তরাজ্যের উদহারণকে সামনে রেখে এই নিয়োগ দেওয়া হয়।
২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যে আত্মহত্যা বেড়ে যাওয়ায় মন্ত্রিসভায় একই ধরনের পদ সৃষ্টি করেছিল দেশটি। সে সময় তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ট্রেসি ক্রাউচের ওপর এই দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে- নতুন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তেতসুশি সাকামতো বলেছেন, করোনা মহামারিকালে নারীদের আত্মহত্যার হার বেড়ে যাওয়াসহ এ জাতীয় অন্যান্য সমস্যা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী তাকে নিয়োগ দিয়েছেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন কার্যক্রম, প্রচারণার মাধ্যমে একাকীত্ব ও সামাজিক নিঃসঙ্গতা প্রতিরোধ করার এবং মানুষের মধ্যে বন্ধন নিরাপদ রাখার বিষয়ে কাজ করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
এক বছরের বেশি কিছু সময় আগে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর থেকেই জাপানি নারীরা বিষণ্ণতায় ভুগছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালে জাপানে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তার চেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে আত্মহত্যায়।
গত অক্টোবরে জাপানে আত্মহত্যা করেছেন ২১৫৩ জন। আর করোনায় প্রাণ গেছে এক হাজার ৭৬৫ জনের। আর ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত জাপানে আত্মহত্যা করেছেন সাত হাজার ৫০৬ জন।
সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, একাকিত্বের জন্য হৃদরোগসহ নানা রোগ বাসা বাঁধছে জাপানিদের শরীরে। সেখানে নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা তুলনামূলক বেশি। জাপানে অন্যান্য দেশের তুলনায় বিয়ের প্রবণতা কম। এ ছাড়া সেখানকার বেশির ভাগ নারীর সুরক্ষিত কোনো জীবিকা নেই।