গ্যাস-বিদ্যুতে ভর্তুকি কেনো দেব: প্রধানমন্ত্রী
গ্যাস-বিদ্যুতে ভর্তুকি কেনো দেশবাসীকে এ প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর। শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করি তা উৎপাদন করতে প্রতি ইউনিটে খরচ হয় ১২ টাকা। আর সেখানে আমরা নিচ্ছি ৬ টাকা। তাতে অনেক কথা শুনতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে বিদ্যুতের দাম ১৫০ শতাংশ বেড়েছে, এটা সবার মনে রাখতে হবে। আমরা সেই পর্যায়ে যাইনি। গ্যাস, বিদ্যুৎ সাপ্লাই দেওয়া যাবে যদি খরচ যা হয় সেটা সবাই দেয়। কত ভর্তুকি দেওয়া যায়? আর এই ক্ষেত্রে কেন ভর্তুকি দেব? ভর্তুকি দিচ্ছি আমরা কৃষিতে, খাদ্য উৎপাদনে।
আজ রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নবনির্মিত ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত করতে চেয়েছিলাম। আর সেটা অত্যন্ত সফলভাবে আমরা করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি। আমরা বিদেশি বিনিয়োগ চাই, তার সঙ্গে সঙ্গে চাই যে, আমাদের দেশের যুব সমাজ নিজেরাই বিনিয়োগকারী হবে। আমাদের যুব সমাজের জন্য স্টার্টআপ প্রোগ্রাম করে দিয়েছি। সেজন্য আলাদা বাজেটও আছে। কোম্পানি আইন পরিবর্তন করে এক ব্যক্তি কোম্পানি করতে পারে সেই ব্যবস্থাটাও আমরা নিয়েছি। যাতে করে আমাদের নিজেদের ছেলেমেয়েরা উঠে আসতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে বলেন, ২০০১ সালে ৪৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রেখে গিয়েছিলাম। ২০০৯ সালে এসে দেখলাম সেটা কমে ৩০০০ মেগাওয়াটের দিকে নেমে গেছে। আমি জানি না কোনো দেশ পেছনের দিকে যায় কি না। আজকে দেশে শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেব, আমরা তা পৌঁছে দিয়েছি।
দেশের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, জেনারেটরের ওপর যে ট্যাক্স ছিল, সেটা আমরা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলাম। প্রতিটি ছোট কোম্পানি যাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে সে ব্যবস্থাও করেছিলাম, যাতে নিজেরা উৎপাদন করে নিজেরা ব্যবহার করে, আবার অন্যদের দিতে পারে। ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে ভালোভাবে চলে, বিনিয়োগ আসে সেই চেষ্টা আমরা করি।
সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মৎস্য ভবনের একটি ফ্লোরে একটি অফিস ছিল। আমরা বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে চাই। বিদেশিরা আসবে, দেখবে, বিনিয়োগ করবে। সেজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, আলাদা একটি ভবন করে দেব। সেখানে যারা কাজ করবেন তারা যেন মনের শান্তিতে কাজ করতে পারেন।
মহামারী করোনা যাতে মোকাবিলা করতে পারি সেইজন্য বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পকারখানা চালু থাকে। প্রণোদনা দেওয়ার ফলেই অর্থনীতির গতিটা সচল রয়েছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা। আমাদের সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাংলাদেশ এখন ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পারে। বাঙালি পারে। একটা চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা সেতু নিয়ে। এ সেতু তৈরিতে মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। আমি বলেছিলাম নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু করব, করেছি। এক্ষেত্রে জনগণ আমাকে সমর্থন করেছিল।