গণপরিবহণে সরকারের কোনো নির্দেশনাই মানা হচ্ছে না
সরকার মহামারী করোনার মধ্যেও মানুষের জীবন জীবিকার জন্য গত ১১ আগস্ট থেকে সারা দেশে লকডাউন শিথিল করে। এ প্রজ্ঞাপনে নতুন কিছু বিধিনিষেধ যুক্ত করা হয়। লকডাউন শিথিলের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর সড়কগুলোতে চলছে গণপরিবহণ।
প্রজ্ঞাপনে পুরনো ভাড়ায় সব আসনে যাত্রী বহন করার নির্দেশনা দিলেও পরিবহণগুলোতে জীবাণুনাশক প্রয়োগ, মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এসব কঠোর ভাবে মানার নির্দশনা দেয় সরকার কিন্তু এসব কিছু মানা হচ্ছে না গণপরিবহণগুলোতে।
সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মোট বাসের অর্ধেক চলাচল করবে। এ ছাড়া বাসে যত সংখ্যক আসন রয়েছে, ঠিক তত সংখ্যক যাত্রী তোলা যাবে। অর্থাৎ কোনভাবেই দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহণ করা যাবে না। তবে এসবের কিছুই মানা হচ্ছে না রাজধানীর পরিবহণগুলোতে।
আজ বৃহস্পতিবার মিরপুরের কালশী মোড়ে কথা হয় একটি বাস কোম্পানির কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা সুপারভাইজারের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রয়োজনের তুলনায় বাস কম হওয়ায় যাত্রীর চাপ বেশি। ফলে কোনো কোনো অবিল এলাকা থেকে দুই একজন জোর করে বাসে উঠে যাচ্ছেন। ফলে কিছু কিছু এলাকায় দুই চারজন যাত্রী দাঁড়িয়ে যান।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এস এম শাহাজাদা জানান, আজ সকালে তিনি খিলগাঁও থেকে বাহন পরিবহণের একটি বাসে দৈনিক বাংলায় গিয়েছেন। তবে বাসে এত ভিড় ছিলে যে দরজায় ঝুলে যেতে হয়েছে।
তিনি বলেন, এতে কোনো রকম স্বাস্থ্যবিধিই মানা হচ্ছে না। যেখানে বাসের ভেতরে ঢুকতেই পারিনি সেখানে হ্যান্ডস্যানিটাইজারের কোনো প্রশ্নই আসে না।
মিরপুর-১২ থেকে কুড়িলে আসা অপর এক যাত্রী জানান, আল-মক্কায় তিনি এসেছেন। বাসে দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহণ করা হয়েছে। তবে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের কোনো ব্যবস্থাই ছিল না।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা কবির সর্দার জানান, তিনি দেওয়ান পরিবহণে শাহবাগ থেকে নর্দ্দা আসেন। বাসের সংখ্যা কম থাকায় তাকে দাঁড়িয়ে আসতে হয়েছে। তিনি বলেন, বাসে কোনো হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা ছিল না। তাছাড়া অনেককেই দাঁড়িয়ে আসতে হয়েছে। এতে করে ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।
ঘাটারচর থেকে চিটাগাং রোডে চলাচল করা রজনীগন্ধা পরিবহণের টিকিট চেকার ইলিয়াস হোসেন বলেন, এই রোডে রজনীগন্ধার ১০০ বাস চলে সব সময়। এখন অল্প কিছু গাড়ি চলছে, কারণ অনেক গাড়ির স্টাফ এসে পৌঁছায়নি এবং কিছু গাড়ি মেরামত করতে দেওয়া হয়েছে। স্টাফরা এসে পৌঁছালে সব গাড়িই রোডে নামানো হবে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতি মহাসচিব এবং ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ একটি গণমাধ্যমকে বলেন, রাজধানীতে এক কোম্পানির মোট পরিবহণের অর্ধেক পরিবহণই চলাচল করছে। যারা বলেছে অর্ধেক বেশি বা সব পরিবহণ চলাচল করছে তারা ভুল বলেছে। আর মেট্রোতে সরকারি নির্দেশনা সম্পূর্ণভাবে মানা সম্ভব না কোনভাবেই। মোড়ে মোড়ে স্টপেজ তাই সব স্টপেজে জীবাণুনাশক স্প্রে করা সম্ভব না। এতে যাত্রা পথে অনেক সময় নষ্ট হবে। সূত্র : যুগান্তর।