খালেদা জিয়ার মেডিকেল রিপোর্ট, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর বক্তব্য
বেগম জিয়ার মেডিকেল রিপোর্টে যা আছে: বিশ্বস্ত সূত্র থেকে একটি জাতীয় পত্রিকার হাতে আসা খালেদা জিয়ার কিছু মেডিকেল রিপোর্টের তথ্যে দেখা যায়, High Sensitive Troponin-১ রিপোর্ট ভালো আসেনি। এ ক্ষেত্রে একজন নারীর স্বাভাবিক রেফারেন্স মাত্রা ধরা হয় ১৫.৬-এর কম। বেগম খালেদা জিয়ার সেই মাত্রা ২১.২। এই রিপোর্টের মাধ্যমে তার হার্টের অবস্থা নির্ণয় করা হয়।
রক্ত জমাট বাঁধছে কিনা জানতে D-Dimer পরীক্ষা করা হয়। এর স্বাভাবিক রেফারেন্স মাত্রা ৫০০-এর নিচে। বেগম জিয়ার তা ২১৩৪.৩। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে তা রক্ত জমাট বাঁধার ইঙ্গিত দেয়।
তার হিমোগ্লোবিন মাত্র ৭.৭। স্বাভাবিক অবস্থায় তা ১১.৫-১৬.৫-এর মধ্যে থাকার কথা। NT- pro BNP পরীক্ষাও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। স্বাভাবিকভাবে ১২৫-এর কম থাকতে হয়।
বেগম খালেদা জিয়ার রক্ত পরীক্ষায় তা ২২৩৮ এসেছে। এই পরীক্ষার রিপোর্ট তার হার্ট ও ফুসফুসের অস্বাভাবিক অবস্থা বোঝাচ্ছে। এ ছাড়া CA ১২৫ পরীক্ষার উচ্চমাত্রা একটি জটিল রোগের ঝুঁকি নির্ণয় করে। ওই পরীক্ষার স্বাভাবিক মাত্রা ১২৫-এর নিচে হলেও বেগম জিয়ার তা ৯৬২। এ দ্বারা শুধু ওই জটিল রোগের ঝুঁকির মাত্রা বোঝায়।
করোনা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে এ সমস্যাগুলো যেকোনো সময় তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে। তাছাড়া তার ডায়াবেটিক বেশ উঠানামা করছে। এ পর্যন্ত দুই বার ফুসফুস থেকে অতিরিক্ত পানি অপসারণ করা হয়েছে।
যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে পরিবারের আবেদন প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার এসেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ডাক্তাররা অভিমত দিয়েছেন তাকে বিদেশে নেয়া প্রয়োজন। যদিও আমরা ডাক্তারদের কাছ থেকে শুনি নাই। প্রধানমন্ত্রী এসব ব্যাপারে অত্যন্ত উদার। আমরা পজিটিভলি এই ব্যাপারটি দেখবো।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তাকে বিদেশে পাঠানোর ব্যাপারে অনেক গুলো আইনি বিষয় জড়িত। কোর্টের কোনো নির্দেশ লাগবে কিনা? সেটাও দেখতে হবে। সেজন্য আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে। প্রসেস শুরু হয়েছে। তাদের মতামত এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা অবশ্যই পজিটিভলি দেখছি। পজিটিভলি দেখছি বলেই তার দণ্ড আদেশ স্থগিত করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
যা বললেন আইনমন্ত্রী: খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার বিষয়ে বৃহস্পতিবার কয়েক দফায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টেলিফোনে তিনি মানবজমিনকে বলেন, খালেদা জিয়ার বিষয়ে রোববারের মধ্যে হয়তো অভিমত দিবো। তবে রোববারের আগে হয়তো সিদ্ধান্তটা কার্যকর হবে না।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে সাংবাদিকদের আনিসুল হক বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার আবেদনের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের অভিমত যথা শিগগিরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়া হবে। খবরঃ মানবজমিন।