এবার নারী কাউন্সিলর ১০০ জনের শরীরে করোনা টিকা পুশ করলেন!
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের এক নারী কাউন্সিলর তার নিজ কার্যালয়ে প্রায় শতাধিক ব্যক্তিকে করোনাভাইরাসের টিকা দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
ওই নারী কাউন্সিলর এর নাম নাদিয়া নাসরিন। কাউন্সিলর নাদিয়া নাসরিন গত ৯ আগস্ট নগরীর গাংচর এলাকায় তার নিজ কার্যালয়ে নিয়ে এসব মানুষকে টিকা প্রদান করে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যার পর ওই টিকা প্রদানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। উক্ত মহিলা কাউন্সিলর নাদিয়া নাসরিন নগরীর ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর।
উল্লেখ্য, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোক গত ৯ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে নগরীর হারুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় টিকাকেন্দ্রে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে নিজেদের লোকদের আগে টিকা দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এর ফলে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ জনগণ হট্টগোল ও হাতাহাতি শুরু করেন।
হট্টগোল ও হাতাহাতি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এর পর সংঘর্ষের আশঙ্কায় ওই কেন্দ্রে টিকা প্রদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে কাউন্সিলর নাদিয়া নাসরিন বেশ কয়েকটি টিকার ভায়েল ও বেশ কিছু বিশেষ সিরিঞ্জ নিয়ে টিকা কেন্দ্রের অদূরে তার নিজের বাড়ির সামনের কার্যালয়ে চলে যান।
তখন কাউন্সিলর নাদিয়ার অনুসারীরাও এ সময়ে ওই কার্যালয়ে যান। আর সেখানে তিনি নিজ হাতে টিকা প্রত্যাশীদের মধ্যে করোনার টিকার (মডার্না) প্রথম ডোজ প্রয়োগ করেন।
নারী কাউন্সিলর নাদিয়া নাসরিন বৃহস্পতিবার রাতে সাংবাদিকদের বলেন, গত ৯ আগস্ট নগরীর হারুন স্কুলকেন্দ্রে টিকা গ্রহণ নিয়ে মানুষ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এতে ওই সেন্টারে টিকা প্রদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তাই এ সময় টিকাগুলো স্কুলের পাশেই আমার অফিসে নিয়ে আসি। এর পর নিজেই মানুষের শরীরে টিকা পুশ করে দিই। আমি প্রায় ১০০ জনকে টিকা প্রদান করেছি।
নাদিয়া নাসরিন সাংবাদিকদের আরও বলেন, আমার টিকা দেওয়ার প্রশিক্ষণ ও সনদ আছে। তাই আমি নিজেই টিকা দিয়েছি। এতে কারও কোনো অসুবিধা হয়নি। আর যেহেতু আমার প্রশিক্ষণ ও সনদ আছে, এতে কারো কোন আপত্তি থাকারও কথা নেয়।
কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন এ বিষয়ে বলেন, ‘টিকা প্রদান তো কাউন্সিলরের কাজ না, তিনি কোনোভাবেই টিকা পুশ করতে পারেন না। এটা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত। এ বিষয়টি বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে আমি জেনেছি। এ নিয়ে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা ব্যাখ্যা চাইব।