মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথ খুলল
বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার মালয়েশিয়া যাওয়ার পথ আবার খুলেছে। বাংলাদেশীদের জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ ছিলো মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। চলতি মাস থেকেই বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় যাওয়া শুরু হবে। মালয়েশিয়া পাঁচ বছরে পাঁচ লাখ কর্মী নিতে চায়। এর মধ্যে প্রথম বছরেই দুই লাখ কর্মী নিতে চায় দেশটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ মালয়েশিয়ার সঙ্গে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন। ওই বৈঠকে অংশ নেন ঢাকা সফররত মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভানান।
মন্ত্রী ইমরান আহমদ বৈঠক শেষে বলেন, ‘আশা করছি, চলতি জুন মাস থেকেই মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী পাঠানো যাবে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী এক বছরে দুই লাখ কর্মী যাবে মালয়েশিয়ায়। বেতন হবে এক হাজার ৫০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত। আর মালয়েশিয়ায় যাওয়ার খরচ বা অভিবাসন ব্যয় হবে সব মিলিয়ে এক লাখ ৬০ হাজার টাকার কম।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা এক হাজার ৫২০। আমরা পুরো তালিকাই তাদের কাছে পাঠিয়েছিলাম। এখানে একটা কথা মনে রাখতে হবে, সমঝোতা অনুযায়ী কাদের মাধ্যমে লোক মালয়েশিয়ায় যাবে, সেই রিক্রুটিং এজেন্ট নির্বাচন করার অধিকার মালয়েশিয়ার। ’
মন্ত্রী অভিবাসন খরচ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের সমঝোতাপত্রেই খরচের বিষয়টা উল্লেখ করা আছে। কিছু অংশ বাংলাদেশ প্রান্তের খরচ আছে, সেটি কর্মীকে বহন করতে হবে। আর বিমান টিকিট থেকে শুরু করে অন্য সব খরচ দেবেন মালয়েশিয়ান নিয়োগকর্তা। আগের সমঝোতায় বিমান টিকিট একটি ছিল, এখন আসা-যাওয়ার দুই টিকিটের খরচই নিয়োগকর্তা বহন করবেন। ’
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, ‘মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, শূন্য অভিবাসন ব্যয় নিশ্চিত করার জন্য তাঁরা কাজ করে যাবেন। যদি কোনো এজেন্সি বা নিয়োগকর্তা আইন ভঙ্গ করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা। ’
এদিকে একটি সূত্র জানায়, যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া অন্তত পাঁচ লাখ কর্মী নেবে বলে জানায়। সেই সঙ্গে দেশটি বাংলাদেশ থেকে নিরাপত্তাকর্মী ও গৃহকর্মী নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বৈঠকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে অন্তত দুই লাখ কর্মী মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ইকোনমিক সেক্টরে যাবেন। একই সঙ্গে নতুন অনেক সেক্টর আছে যেগুলো এখনো চালু হয়নি, বাংলাদেশের জন্য সেগুলো চালু করতে তাঁরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবেন।
বৈঠকে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলমসহ দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।