নাটোর-২ আসনের এমপি শিমুলের বিরুদ্ধে জিডি
রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় নাটোর-২ আসনের এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সরকার সুজিত কুমার জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চেয়ে গত ২৯ জুলাই এ জিডি করেন।
অধ্যাপক ড. সরকার সুজিত কুমার সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করেন, আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের একজন শিক্ষক এবং বর্তমানে বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। বর্তমানে সপরিবারে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কুমারপাড়ায় বসবাস করি। মহান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে আমি চারটি গ্রন্থ রচনা করেছি। তার মধ্যে একটি নাটোর জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক।
গ্রন্থটি ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয়। পরের বছর ২০১০ সালে গ্রন্থটির প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় ২০২১ সালের বইমেলায়। ওই গ্রন্থে নাটোর সদর আসনের (নাটোর-২) এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের পিতার নাম রাজাকারের তালিকায় স্থান পেয়েছে। প্রথম গ্রন্থে ৩১০ পৃষ্ঠা, প্রথম সংস্করণের ৩৬১ পৃষ্ঠায় এবং দ্বিতীয় সংস্করণের ৬০০ পৃষ্ঠায় রাজাকার হাসান আলীর নাম মুদ্রিত হয়েছে।
সাধারণ ডায়েরিতে অধ্যাপক ড. সরকার সুজিত কুমার আরও বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। শহীদ ও স্বাধীনতা বিরোধীদের নাম মাঠ পর্যায়ে তিন বছর যোগাযোগ করে নাটোর জেলার গ্রামগঞ্জে ঘুরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে সাক্ষাৎকার নিয়ে ছবি তুলে গ্রন্থে তথ্য সন্নিবেশিত করেছি। একাধিক সাক্ষাতকারদাতা নাটোর কান্দিভিটার (পুরাতন কোর্টপাড়া) হাসান আলী একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় একজন কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন বলে তথ্য দিয়েছেন। আমি তাদের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী গ্রন্থে তার নাম সংযোজন করেছি।
জিডিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে নাটোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠন নিযে নিজেদের মধ্যে দ্বিধা, দ্বন্দ্ব ও ভিন্নমত সৃষ্টি হলে আমার গ্রন্থটি আলোচনায় আসে। এরপর এমপি শিমুলের পক্ষ অবস্থান নিয়ে ইতিমধ্যেই আমাকে কিছু অপরিচিত সন্ত্রাসী জীবননাশের হুমকি বারবার দিয়ে যাচ্ছে। আমি একজন নিরস্ত্র শিক্ষক। এখন আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিধায় অইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি।
অপরদিকে হুমকি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমি কাউকেই হুমকি দেইনি। এমনকি আমার কোনো সমর্থক এর সঙ্গে জড়িত নয়। আমি ইতিমধ্যেই রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এবং নাটোরের এসপিকে বিষয়টি নিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বলেছি। মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল আরও বলেন, সুজিত কুমারের সঙ্গে নাটোরের কাদের যোগাযোগ আছে তদন্ত করলেই সব ষড়যন্ত্র বেরিয়ে আসবে বলে মনে করি। তিনি যে বইটি প্রকাশ করেছেন সেখানে প্রথম সংস্করণে নাম ছিল হাসান আলীর। সেখানে কোনো ঠিকানা ছিল না। এর পরের সংস্করণে হাসান আলীর সঙ্গে সরদার যুক্ত করেছেন। আমিও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব বলে মন্তব্য করেন তিনি।