দুবন্ধু কাঁদলেন আবার হাসলেনও একসাথে
বার্সেলোনা ক্লাবে একসাথে খেলার সময় থেকেই মেসির সাথে নেইমারে বন্ধুত্ব ছিল অতুলনীয়। শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও তাদের বোঝাপড়া ছিল দারুণ।
কোপা আমেরিকার ম্যাচ শেষে কান্নায় ভেঙে পড়লেন লিওনেল মেসি ও নেইমার জুনিয়র দু’জনই। আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের দুই সুপারস্টারের কান্নার প্রেক্ষাপটটা অবশ্য ভিন্ন। সুদীর্ঘ অপেক্ষার পর ট্রফি জয়ের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন লিওনেস মেসি। তার এ কান্না আনন্দের এবং সেরা প্রাপ্তির।
আর নেইমার জুনিয়র এর বেলায় বিপরীত চিত্র। সুপারস্টার নেইমারের কান্না হতাশার ও দুঃখের। অল্পের জন্য ছোঁয়া হলো না ট্রফিটা। তিনি এখন পর্যন্ত জিততে পারেন নি কোপা আমেরিকার ট্রফি। এবারও ঘরের মাটিতে শিরোপার হাতছোঁয়া দূরত্ব থেকে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। তাই নেইমারের চোখের জল যেন বাঁধ মানে না।
লিওনেল মেসি এগিয়ে এলেন প্রতিপক্ষ ব্রাজিল দলের সেরা খেলোয়াড়কে সান্ত্বনা জানাতে। এমন দিন তো তিনিও পার করেছেন কতো! নেইমার তার দীর্ঘদিনের বন্ধু। বার্সেলোনায় একসঙ্গে খেলেছেন বেশ কয়েকটা মৌসুম। নেইমারকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনার ভাষা খুঁজছিলেন মেসি।
এরফলে কিছুক্ষণ পরই পাল্টে গেল সম্পূর্ণ দৃশ্য। হারের ক্ষত ভুলে গিয়ে নেইমার এগিয়ে গেলেন মেসির কাছে। ড্রেসিংরুমের ছবিটা দেখলে চোখ কপালে উঠবে গোড়া ব্রাজিলিয়ান সমর্থকেরও। পাশাপাশি বসে হাসিতে মেতে উঠেছেন মেসি-নেইমার!
মাঠে যতই প্রতিপক্ষ হন না কেন, বন্ধু তো বন্ধুই! একথাটি তারা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিলেন কতো সুন্দরভাবে! আর আমাদের দেশে তাদের খেলা নিয়ে কত ঝগড়া হয়। আমরা এই খেলার জন্য ভুলে যাই বন্ধুত্ব, হয়ে ওঠি ভয়ংকর।
কিছুদিন আগে আমরা দেশের সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারি, দেশের বিভিন্ন জায়গায় দু’দলের সমর্থকদের মাঝে ঝগড়া ও মারামারি এমন এক পর্যায়ে চলে যায় যাতে প্রশাসনকে নিতে হয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা।
গত ৬ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্রজিল এবং আর্জেন্টিনার দর্শকরা আমাদেরকে লজ্জায় ফেলে মারপিঠে লিপ্ত হয়। আমরা আমাদেরই পরিচিত লোকদের রক্তাক্ত করি। আসলে কি আমরা কোনোভাবেই আমাদের এমন নিকৃষ্ট কাজের জন্য লজ্জা পায়? আমরা কি উদাহরণ রেখে যাচ্ছি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।
জানতে পড়তে পারেন : ব্রাজিলের সাপোর্টারকে পেটালেন আর্জেন্টিনার সাপোর্টার
আরও পড়ুন: এবার আর্জেন্টিনার ৩ সাপোর্টারকে পেটালেন ব্রাজিলের সাপোর্টার
আমরা যদি আসলেই তাদের ভালো সমর্থক হয় আমাদেরও তাদের মতো বন্ধুত্বের কথা মনে রেখে, খেলা শেষে আবার আগের মতো মিলেমিশে চলতে হবে এবং খেলাটাকে খেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।