মহামারিতেও রেমিট্যান্সে রেকর্ড গড়ল রেমিট্যান্সে যোদ্ধারা
রেমিট্যান্সে রেকর্ড গড়ল প্রবাসীরা। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দেশের অর্থনীতি যখন থমকে গেছে তখন প্রবাসী আয়ে তাতে প্রাণ ফিরেছে। সদ্যবিদায়ী অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা টাকার হিসাবে দুই লাখ ১০ হাজার ৬১০ কোটি টাকার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ (৩০ জুন পর্যন্ত) ৪৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় চার হাজার ৬৪২ কোটি ডলার। যা টাকার হিসাবে তিন লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এই বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে দেশের ১১ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, প্রবাসী বাংলাদেশী রেমিট্যান্সে যোদ্ধারা ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের তুলনায় ৩৬ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স প্রেরণ করে। এর আগের বছর এটি ছিল ১৮.২০ বিলিয়ন ডলার। অর্থবছরের হিসাবে একসঙ্গে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স এর আগে দেশে আসেনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান মুখপাত্র এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবাসী বাংলাদেশীদের (এনআরবি) উৎসাহিত করতে আইনী চ্যানেলগুলো সহজতর করার উদ্যোগ নেয়ায় চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ রেকর্ড সর্বোচ্চ হয়েছে।
ব্যাংকের প্রধান মুখপাত্র এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক রেমিট্যান্স প্রবাহ দেখে প্রতীয়মান হয় যে, এটি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ২০২১-২২ অর্থবছরেও এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। ২০২১ অর্থবছরে অগ্রণী, জনতা, রূপালী, সোনালী, বেসিক ও বিডিবিএল এ ছয়টি রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক ৬.১১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে এবং একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বিশেষায়িত ব্যাংক- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ০.৪১ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে।
রাষ্টায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক ২.৮২ বিলিয়ন ডলার, জনতা ব্যাংক ০.৯৫ বিলিয়ন, রূপালী ব্যাংক ০.০৮ বিলিয়ন, সোনালী ব্যাংক ১.৫৩ বিলিয়ন এবং বেসিক ব্যাংক ০.০০২২৩ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে। এ ছাড়া প্রবাসীরা বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে ১৮.১৪ বিলিয়ন ডলার প্রেরণ করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরও দুই টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী। এছাড়া ঈদ ও উৎসবে বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সরকারের প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি এক শতাংশ দেওয়ার অফার দিচ্ছে। এতে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন প্রবাসীরা।