ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেমিকার বাসায় গিয়ে প্রেমিকের আত্নহত্যার অভিযোগঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে প্রেমিকার বাসায় গিয়ে অন্তর (২০) নামের এক প্রেমিক ফাঁসিতে ঝুলে আত্নহত্যা করার অভিযোগ ওঠেছে।
এ ঘটনায় জিয়াসমিনকে (২৪) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সদর মডেল থানার হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহরের কাউতলী এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে। উদ্ধারকৃত লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মৃত অন্তর চৌধুরী জেলা শহরের কাউতলী ডিসি বাংলো এলাকার কামাল চৌধুরীর ছেলে। এই ঘটনায় প্রেমিকের লাশ নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পর তিন সন্তানের জননী প্রেমিকা জিয়াসমিনকে আটক করে পুলিশ।
আটক জিয়াসমিন সিলেট জেলার সদর উপজেলায় মৃত শুক্কুর মিয়ার মেয়ে। সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের প্রথমে ভাদুঘর পরে কলেজপাড়া ও কাউতলী বসবাস করে আসছিল।
হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১ বছর আগে জিয়াসমিনের সাথে তার আগের স্বামীর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে আস্তে আস্তে অন্তর চৌধুরীর সঙ্গে জিয়াসমিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
আগের স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ির বিষয়টি প্রেমিক-প্রেমিকা উভয়ের পরিবারই জানতো। অন্তর চৌধুরী প্রায়ই প্রেমিকার বাসায় আসা-যাওয়া করতো। এমন কি প্রায়ই প্রেমিকার ঘরে রাত যাপনও করতো অন্তর।
গত সোমবার রাতে মায়ের সাথে অভিমান করে অন্তর প্রেমিকার বাসায় চলে যায়। সে কক্সবাজার ঘুরতে যাবে বলে প্রেমিকার কাছে টাকা চাই, তা নিয়ে ওই রাতে দুই জনের মধ্যে মনমালিন্য হয়। পরের দিন দুপুরে জিয়াসমিন টাকার জন্য তার চাচার কাছে যায়৷ বিকেলে বাসায় ফিরে দেখে অন্তরের বাম হাত ব্লেড দিয়ে কাঁটা ও ফাঁসিতে ঝুলে রইছে অন্তর।
হাসপাতালে জিয়াসমিনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৬ মাস আগে অন্তরের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়েছিল। ২ মাস যাবত জিয়াসমিনের বাসায় থাকতো অন্তর। এভাবে আসা যাওয়ার কারনে উভয়ের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক হওয়ায় দুই মাসের মধ্যে অন্ত:সত্ত্বা হয় জিয়াসমিন। এই বিষয়টি এলাকার অনেকে ও অন্তরের মাও জানতেন।
গতকাল তার মায়ের সাথে অভিমান করে জিয়াসমিনের কাছে চলে আসে অন্তর। আগামীকাল টাকার জন্য কক্সবাজার যায়তে পারবে না বলে নিজের হাত ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলে অন্তর। পরে দুপুরে জিয়াসমিন টাকা নিয়ে বাসায় ফিরে দেখে অন্তর ফাঁসিতে ঝুলে আত্নহত্যা করেছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রেমিকার সাথে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম। তিনি জানান, বরাবরের মত সোমবার রাতেও অন্তর চৌধুরী তার প্রেমিকার বাসায় যান। পরের দিন বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্নহত্যা করেছে বলে জিয়াসমিনের সাথে কথা বলে জানতে পারি।
প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা মনে হলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না। আমরা প্রেমিকা জিয়াসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। এই ঘটনায় এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়তে পারেন: