স্বর্ণপদক জয়ী সেই ইঁদুর অবসরে যাচ্ছে
একের পর এক সফলতা এসেছে কর্মজীবনে। স্বর্ণপদকের মতো সম্মাননাও জুটেছে বীরত্বের জন্য। এখন অবসরে যেতে হচ্ছে তাকে। স্বাভাবিকভাবেই যে কারও মনে হবে পেশাগত জীবনে সফল কোনো ব্যক্তির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এ হচ্ছে এক ইঁদুরের গল্প।
ইঁদুরটির নাম মাগাওয়া। বাড়ি আফ্রিকায় হলেও কর্মস্থল ছিল কম্বোডিয়ায়। দেশটিতে মাটিতে পুঁতে রাখা মাইন শনাক্ত করে অনেকের চোখে সম্মানের স্থানে আছে এ ইঁদুর।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচ বছরে ৭১টি মাইন এবং অনেক বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্ত করে অসংখ্য মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে মাগাওয়া। এ জন্য স্বর্ণপদকও দেওয়া হয়েছে এই ইঁদুরকে।
তবে সাত বছর বয়সী আফ্রিকান এ প্রাণীকে এখন অবসরে যেতে হচ্ছে। মাইন শনাক্তের কাজে তার বদলে যুক্ত হচ্ছে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী ইঁদুর। কম্বোডিয়াজুড়ে আনুমানিক ৬০ লাখ মাইন পুঁতে রাখা আছে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে।
মাগাওয়াকে সেসব মাইন শনাক্তের কাজে আফ্রিকার তাঞ্জেনিয়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে নিয়ে আসা হয়। বেলজিয়ামে নিবন্ধিত তাঞ্জেনিয়াভিত্তিক দাতব্য সংস্থা অ্যাপোপোতে অনেকগুলো ইঁদুরকে মাইন শনাক্তের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
‘হিরো র্যাটস’ বলা হয় ১৯৯০ সাল থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া এসব ইঁদুরকে। মাগাওয়া ছিল সেসব সাহসী ইঁদুরের একটি। কম্বোডিয়ায় মাইন সরানোর কাজে যুক্ত কম্বোডিয়ান মাইন অ্যাকশন সেন্টারের (সিএমএসি) অধীনে কাজ করত মাগাওয়া।
সে অবসরে যাওয়ায় সিএমএসিকে প্রশিক্ষিত নতুন একদল ইঁদুর সরবরাহ করেছে অ্যাপোপো। তবে অবসরে গেলেও আরও কিছুদিন থাকতে হচ্ছে মাগাওয়াকে।
দাতব্য সংস্থাটি জানায়, নতুন ইঁদুরগুলোর ‘উপদেষ্টা’ হিসেবে আরও কয়েক সপ্তাহ কাজ করবে সে। কম্বোডিয়ার পরিবেশে নতুনদের খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করবে মাগাওয়া।
অ্যাপোপো বলছে, টেনিস খেলার একটি মাঠের সমান কোনো জায়গায় মাইন আছে কি না, মাত্র ২০ মিনিটের ভেতরে বের করে ফেলতে পারে মাগাওয়া। সে কাজটি একটি মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে কোনো মানুষকে করতে এক থেকে চার দিন লাগবে। অ্যাপোপোর ৭৭ বছরের ইতিহাসে মাগাওয়াই প্রথম প্রাণী, যে পিডিএসএ পদক অর্জন করে।