বাঁশখালী নির্মানাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কিছু তথ্য
বাঁশখালীতে যে কোম্পানির নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও যুক্তিসঙ্গত কর্মঘন্টার দাবি জানানোর অপরাধে গুলি করে খুন ও জখম করা হয়েছে সেই কোম্পানি সরকারের কাছ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি কর মওকুফ পেয়েছে দুবছর আগে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক প্রজ্ঞাপনে এ সুবিধা ঘোষণা করা হয় ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ল্যান্ড লিজ অ্যাগ্রিমেন্ট এবং ফাইনান্সিং ডকুমেন্টসের অন্তর্ভুক্ত দলিলাদি রেজিস্ট্রেশনের ওপর আরোপিত স্ট্যাম্প ডিউটি’ বাবদ এস আলম গ্রুপ-এর কাছে সরকারের প্রাপ্য ৩ হাজার ১৭০ কোটি ৮৭ লাখ ৪৫ হাজার ৮০১ টাকা সরকার মওকুফ করেছে। খাসজমি দখল দেওয়াসহ আরও বিবিধ সুবিধা তো আছেই।
এই পরিমাণ টাকা দিয়ে কী হতে পারে? করোনা লকডাউনের সময় নিয়মিত নিশ্চিত আয় নাই এরকম ১ কোটি পরিবারকে এককালীন ৩ হাজার টাকা করে দেয়া যেতো।
পিকে হালদার যে টাকা মেরে পালিয়েছে সেই টাকায় তাদের আরও এক মাসে ৩ হাজার টাকার বেশি দেওয়া যেতো। বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসিয়ে রেখে সরকার কিছু কোম্পানিকে বছরে দিচ্ছে ৯ হাজার কোটি টাকা। সেই টাকায় ১ কোটি পরিবারকে ৩ মাস ৩ হাজার টাকা করে সমর্থন দেয়া যেতো।
সরকার ঘনিষ্ঠ লুম্পেন কোটিপতিরা আরও যতো টাকার সুবিধা পাচ্ছে, পাচার করছে তার একাংশ খরচ করলে সর্বজনের উন্নতমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত নেয়া যেতো, সকলের জন্য পূর্ণ রেশনিং চালু করা যেতো।
না, সরকারের এসবে আগ্রহ নেই। যেসব প্রকল্প বাংলাদেশের মানুষকে দীর্ঘমেয়াদে বিপদগ্রস্ত করবে, উচ্ছেদ করবে, অসুস্থ করবে সরকার সেসব প্রকল্পের জন্য জবরদস্তি করবে, তাদের কর মওকুফ করবে, তাদের ভর্তুকি দেবে, তাদের রক্ষায় পুলিশ বাহিনীকে ক্ষুধার্ত মানুষের উপর গুলি চালাতে দেবে। আর মানুষ যখন প্রাণ রক্ষার্থে রিকশা চালাতে যাবে তার রিকশা জব্দ করবে, বকেয়া মজুরি যখন চাইতে যাবে তখন তার ওপর আক্রমণ চালাবে!
সমস্যা টাকার নয়। প্রশ্ন হলো কার টাকা কোথায় যায়? কার টাকায় সরকার কার সেবা করে?
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এর ওয়াল থেকে সংগ্রহ।