করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আরও প্রাণঘাতী হয়ে নতুন করে আঘাত হেনেছে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ নতুন করে আঘাত হেনেছে এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ের করোনাভাইরাস আরও প্রাণঘাতী হয়ে আবির্ভূত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বলেছেন যে, গত সপ্তাহে দ্বিতীয় ঢেউ প্রবল আকার ধারণ করলে মানুষের চলাচলে কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হয়। “আপনারা দেখছেন কোনভাবেই সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে তাই আরও কিছু কঠোর ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। আমি জানি এর ফলে অনেকেরই জীবন জীবিকায় অসুবিধা হবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে -মানুষের জীবন সর্বাগ্রে। বেঁচে থাকলে আবার সব গুছিয়ে নিতে পারবো।”
শেখ হাসিনা আরও বলেন গত বছর একটানা ৬২দিন সাধারণ ছুটি বলবৎ করা হয়েছিলো ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনো খুলে দেয়া যায়নি। স্বাভাবিক হয়নি বিদেশের সঙ্গে চলাচল। “মানুষের জীবন রক্ষার পাশাপাশি অর্থনীতি, জীবন-জীবিকা যাতে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে না পড়ে সেদিকে আমরা কঠোর দৃষ্টি রাখছি”।
গত বছরে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ ও প্রণোদনা প্যাকেজের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন প্রায় আড়াই কোটি মানুষকে বিভিন্ন সরকারি সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আপনাদের শঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। সরকার সবসময় আপনাদের পাশে রয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পর দরিদ্র নিম্নবিত্ত মানুষের সহায়তায় কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি।”
তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী পল্লী অঞ্চলে কর্মসৃজনের জন্য ৮০৭ কোটি এবং রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৬৭২ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা থেকে ১ কোটি ২৪ লাখেরও বেশি নিম্নবিত্ত পরিবার উপকৃত হবেন।
করোনাভাইরাস টিকার বিষয়ে তিনি বলেন ইতোমধ্যেই ৫৬ লাখেরও বেশি মানুষের প্রথম ডোজ টিকা দেয়া সম্পন্ন হয়েছে। “আমরা পর্যায়ক্রমে দেশের সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসবো। আমাদের সে প্রস্তুতি রয়েছে। যদিও টিকা দিলেই সুরক্ষিত হবার নিশ্চয়তা নেই বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। তাই টিকা নেয়ার পরেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।”
শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় বলেন প্রতিটি জেলায় করোনাভাইরাস রোগীর চিকিৎসা সুবিধার আওতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতালগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিদ্যমান আইসিইউ সুবিধা আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
এরপরেও সবাইকে সাবধান হবার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন নিজের, পরিবারের সদস্যদের ও প্রতিবেশীদের সুরক্ষার দায়িত্ব প্রত্যেকের। সে কারণেই ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে ও বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেন, “সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এই মহামারি আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হবো।”