আজ আমাদের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।
আজ স্বাধীনতার ৫০ বছরের মাহেন্দ্রক্ষণে পা রাখল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। আজ সেই অতিকাক্সিক্ষত ঐতিহাসিক ২৬ মার্চ; আমাদের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।
৫০ বছর আগে ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বিশ্বের মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে বাংলাদেশের।
৯ মাস সশস্ত্র যুদ্ধের পর ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির মধ্যদিয়ে উদিত হয় সবুজ জমিনে রক্তিম সূর্যখচিত একখন্ড বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক এই দিনটিকে ঘিরে দেশের ১৭ কোটি মানুষের রয়েছে অনেক দুঃখ-কষ্ট-বেদনা; উচ্ছ্বাস, আবেগ, অনুভ‚তি আর আনন্দবেদনার মিশ্রণ। অনেক ত্যাগ, অনেক সংগ্রাম, অনেক রক্তের বিনিময়ে এসেছে এ স্বাধীনতা।
স্বাধীনতার লক্ষ্যে যুদ্ধের মযদানে একাত্তুরে যে সূর্যসন্তানরা দেশের জন্য আত্মোৎসর্গ করেছেন; প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন; সেসব বীর সূর্য সন্তানদের জানাই বিনম্র অজস্র সালাম আর শ্রদ্ধা।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এ বছরটি বাংলাদেশের মানুষের জন্য অন্যান্য গৌরবের বছর বটে। এ বছরই বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। ফলে এবার দিবসটি উদযাপনে যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। এর সাথে সাফল্যের আরো একটি নতুন পালক যোগ হয়েছে ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে’ জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ। অথচ স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ির’ দেশ আখ্যা দিয়েছিল মার্কিন রাষ্ট্রদূত হেনরি কিসিঞ্জার।
হাঁটিহাঁটি পা-পা করে স্বাধীনতা অর্জনের ৫০টি বছর পার করল বাংলাদেশ। আসছে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। ২০২১-এর বাংলাদেশ আজ অন্য রকম এক বাংলাদেশ। বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার বাংলাদেশ।
যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিশ্ব নেতাদের কারো কারো মতে, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার ‘তেজি ষাঁড়’, কারো মতে, ‘উন্নয়নের রোল মডেল, কারো মতে, ‘অফুরন্ত সম্ভাবনার’ এক বাংলাদেশ। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দীতে আমরা এখন অন্যরকম এক বাংলাদেশকে দেখছি।
আজ সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা এবং ঢাকা শহরে সহজে দৃশ্যমান ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে।
ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন বাহিনীর বাদকদল স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাদ্য বাজাবেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী বাণী প্রদান করেছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে। ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।