মামুনুল হকের মাহফিল আটকে দিলো প্রশাসন
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় হিন্দু বাড়িঘরে হামলার জের ধরে উত্তেজনার মধ্যেই জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায় হেফাজতে নেতা মামুনুল হকের একটি ওয়াজ মাহফিল আটকে দিয়েছে প্রশাসন।
জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায় ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করেছিল সেখানকার একটি মাদ্রাসা। আগামীকাল রোববার সকাল থেকে এ মাহফিল শুরু হওয়ার কথা ছিল।
মাহফিলে অতিথির তালিকায় ছিলেন হেফাজতে ইসলামের নেতা সাম্প্রতিক সময় আলোচনায় আসা মামুনুল হকের নাম।
গত বুধবার ওই জেলার শাল্লা উপজেলায় হিন্দু বাড়িঘরে হামলার জের ধরে উত্তেজনার মধ্যেই মামুনুল হকের জামালগঞ্জে আসা নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মাহফিল স্থগিত ঘোষণা করেন আয়োজকরা।
স্থানীয় সাংবাদিক আকবর হোসেন বলছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে দু’পক্ষকে নিয়েই বৈঠকে বসেছিল স্থানীয় প্রশাসন। আয়োজকরা জানান, ‘মাহফিলের প্রচার চালানো হচ্ছিল। এদিকে আওয়ামী লীগ ও সমমনা সংগঠনগুলো দফায় দফায় মিছিল করেছে। পরে প্রশাসন দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসে। বৈঠকের একপর্যায়ে মাহফিল স্থগিত করার কথা জানানো হয়।’
তবে মাহফিল আয়োজকদের একজন মাওলানা কাওসার আহমেদ বলেছেন প্রশাসনের অনুরোধে তারা আপাতত তাদের কর্মসূচি স্থগিত করলেও ২৬ মার্চের পর তারা মামুনুল হককে নিয়েই মাহফিলের আয়োজন করবেন।
তিনি বলেন, ওসি, এসপি ও এমপি অনুরোধ করেছেন যে ২৬ মার্চের আগে মাহফিল না করতে। আমরা সেটি মেনে নিয়েছি। আমরা ২৬ মার্চের পরেই মামুনুল হককে নিয়ে মাহফিলের আয়োজন করবো। তার তো সংশ্লিষ্টতা নেই শাল্লার ঘটনায়। যারা জড়িত তাদের তো ধরেছে পুলিশ।
যদিও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মোহাম্মদ আলী বলছেন, শাল্লার ঘটনার পর মামুনুল হকের উপস্থিতি তারা মেনে নেবেন না। কেউ তাদের অনুমতি দেয়নি। আমরাও জানি না। হুজুররা নিজেরাই তারিখ করছে। তিনি আগে বলেছে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নদীতে ফেলবে। শাল্লায় একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিনি যেন এখানে না আসে। আরেকটা উত্তেজনা যেন সৃষ্টি না করেন।
এ দিকে মামুনুল হকের সাথে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোটের সাবেক একজন সংসদ সদস্যকেও অতিথি করে মাহফিলের প্রচার পোস্টারে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার নাম ব্যবহার নিয়েও ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। ওই দুই নেতা এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব জানিয়েছেন, আয়োজকরাও মাহফিলের আয়োজন নিয়ে মরিয়া হয়ে ওঠায় প্রশাসন থেকে এটি বন্ধ করার অনুরোধ করা হয়েছে। ২৬ মার্চের পর মামুনুল হককে নিয়ে আবার কোনো কর্মসূচি আয়োজনের চেষ্টা করলে তখন পরিস্থিতি বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবেন। সূত্র : বিবিসি