উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উপজেলার একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির প্রস্তাবনা নিয়ে প্রধান শিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলা পরিষদে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। বিকেল ৫ টার দিকে প্রধান শিক্ষক আল আমিন খানকে চিকিৎসার দিয়ে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উপজেলার লাউর ফতেহ আরএনটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার জাকির আহমেদ জানান, স্কুলের এডহক কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে এডহক কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি এডহক কমিটির সভাপতির জন্য প্রস্তাবনা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সভাপতি পদে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক তার নাম এককভাবে প্রস্তাব করতে প্রধান শিক্ষক আল আমিন খানকে চাপ প্রয়োগ করেন। তখন প্রধান শিক্ষক আল আমিন খান তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও এনআইডি কার্ডের ফটোকপি দিতে বলেন। কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যান তা দিতে পারেননি। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার দুপুরে প্রধান শিক্ষক আল আমিন খান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ফেরার পথে নিচতলায় ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক তার ওপর হামলা করেন। একজন শিক্ষক হচ্ছে মানুষ গড়ার কারিগর। তাদের ওপর হামলা হলে আর কী বাকি থাকে। আমি এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। প্রধান শিক্ষক আল আমিন খান জানিয়েছে এই ঘটনায় তিনি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
মারধরের শিকার প্রধান শিক্ষক আল আমিন খান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বলেন, আমি এই বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না। উনি যেভাবে চাচ্ছিলেন, আমি তেমনই করতে চাচ্ছিলাম। তিনি আমাকে এলোপাতাড়ি জনসম্মুখে মারধর শুরু করেন। আমি আর কিছু বলতে পারব না। আপনারা ইউএনওর সঙ্গে কথা বলুন।
মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত নবীনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক বলেন, ‘এই স্কুলের এডহক কমিটি নিয়ে প্রধান শিক্ষক টালবাহানা শুরু করেন। তিনি বর্তমান সভাপতি জাকির হোসেনকে পুনরায় সভাপতি করতে চাচ্ছেন। আজ উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে ছাত্রলীগের ছেলেরা প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চেয়েছেন কেন তিনি টালবাহানা করছেন। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। তখন আমি তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসি।’
এ বিষয়ে জানতে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল সিদ্দিকের কাছে জানতে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তার সরকারি নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মেহেদী মাহমুদ আকন্দ বলেন, ‘আমি বিষয়টি অবগত নই। জেনে বিস্তারিত আপনাদের জানাতে পারব।’
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রশিদ বলেন, ‘ফেসবুকে এমন একটি ঘটনার বিষয়ে দেখেছি। তবে কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইননুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।