লুঙ্গি ডান্সের প্যারোডিতে প্রচারে ঝড় বামেদের
অপরাধ ছিল সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে খোলাখুলি মত জানানো। আর তাতেই উত্তরপ্রদেশে অপরাধীর তালিকায় স্থায়ীভাবে নাম উঠে গিয়েছে তাঁর। তিনি ডাঃ কাফিল খান। দীর্ঘদিন জেল খেটে সদ্য জামিন পেয়েছেন যোগী রাজ্যের এই প্রতিবাদী ডাক্তার।
তিনি যখন পুলিশের জিম্মায় তখন গোটা দেশের মতো গর্জে উঠেছিলেন বামপন্থীরাও। তাঁর মুক্তির দাবিতে প্রচারও করেছিলেন। সেই সূত্রে তাঁর আলাপ হয় বাম ছাত্র আন্দোলনের সর্বভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে।
এবার তাঁর পূর্বপরিচিত ঐশী ঘোষ, দীপ্সিতা ধর বাংলার নির্বাচনে বামেদের প্রার্থী। আর তাই তাঁদের জয় নিয়ে আশাবাদী হওয়ার পাশাপাশি তাঁদের সমর্থনের কথাও সামাজিক মাধ্যমে ঘোষণা করলেন কাফিল।
শুক্রবার নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে বাংলায় জিতবে লিখে দীপ্সিতাদের উল্লেখ করেন কাফিল খান। বাংলার নির্বাচনে এই দুই ছাত্রীনেত্রীর হয়ে কাফিল খানের প্রচারে আসা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
কাফিল এলে শুধু যে প্রচারের সুর উচ্চগ্রামে বাঁধা পড়বে তা নয়, সিপিএম নেতৃত্ব মনে করছে, এর ফলে সংখ্যালঘু ভোটারদের বার্তাও দেওয়া যাবে। বাংলার একঝাঁক তরুণ বামপ্রার্থীর হয়ে প্রচারে আসতে পারেন কানাইয়া কুমার, জিগনেশ মেভানিরা।
জিগনেশ এর আগে যখন গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, তখন তাঁর হয়ে পুরোদমে প্রচার করেছিলেন জেএনইউ-এর ছাত্রছাত্রীরা। একই ছবি দেখা গিয়েছিল যখন কানহাইয়া বেগুসরাই থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তাই এবার একই ছবি দেখা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে টুম্পা সোনার পর আবার নেট দুনিয়ায় প্যারোডি গেয়ে ঝড় তুলল সিপিএমের দুই তরুণ গায়ক-সুরকার-লেখক নীলাব্জ নিয়োগী-রাহুল পাল জুটি। এবার তাঁদের বিষয়বস্তু চেন্নাই এক্সপ্রেস সিনেমার জনপ্রিয় গান লুঙ্গি ডান্স।
এই গানের প্যারোডিতে তাঁরা লাল ফেরাও, হাল ফেরাও-এর বার্তা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে সারদা-নারদা কেলেঙ্কারি, এসএসসি-টেটে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়ও গানের কথায় উঠে এসেছে। সেখানে দলবদল এবং বিজেপি-তৃণমূলকে এক বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ করা হয়েছে।
এছাড়া সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সদস্য ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তীর কথা ও সুরে গায়ক সপ্তক সানাই দাসের গলায় আরও একটি গান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
‘চাই সংযুক্ত মোর্চার সরকার’ নামের সেই গানে তৃণমূলকে চাল চোর, তোলাবাজ বলে কটাক্ষ করা হয়েছে। পাশাপাশি সকলের হাতে কাজ, সব বাড়িতে ভাতের গন্ধ এবং সবাইকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
অভিনব এই গান প্রচার নিয়ে ধ্রুবজ্যোতি বলেন, যখন লেখার কৌশল মানুষ রপ্ত করেনি, সেই সময় থেকে মানুষ তার কথোপকথনের মাধ্যম হিসেবে গীতিকে বেছে নেয়। সুর, ছন্দে ভরা যে কোনও জিনিস মানুষকে আগে স্পর্শ করে। তাই প্রচার উপকরণে গানের ব্যবহার। তাঁর সংযোজন, মানুষের দাবি নিয়ে গান বাঁধার কাজটা মূল ধারার সংগীতে আর নেই বললেই চলে। ফলে বামপন্থীদের উপরই দায়িত্ব বর্তায় গানের মাধ্যমে মানুষের কথা তুলে ধরার।