কৃষকদের রুখতে দিল্লির রাজপথ যেন ‘ভারত-পাকিস্তান বর্ডার’, স্পিকারকে চিঠি বিরোধীদের
দিল্লি গাজিপুর বর্ডার যেন এখন এক দুর্গ। কৃষকদের আটকাতে সেখানে ইতিমধ্যেই ব্যরিকেড দিয়েছে সরকার। বিরোধী দলগুলিকেও সেই জায়গায় যাওয়া থেকে আটকানো হচ্ছে। এবার এনিয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিল বিরোধী দলগুলি।
চিঠিতে তারা লিখেছে কৃষকদের প্রতিবাদের জায়গাগুলি দেখতে লাগছে ঠক ভারত-পাক সীমান্তের মতো। কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সিংঘু বর্ডারে প্রতিবাদে শামিল হয়েছে একাধিক কৃষক সংগঠন।
আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি দেশজুড়ে চাক্কা ড্যাম কর্মসূচি নিয়েছে তারা। ইতিমধ্যেই তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশ ও বিদেশের একাধিক সেলিব্রিটি। আন্তর্জাতিক পপস্টার রিহানা থেকে পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ তাদের সমর্থন জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে কিছুটা হলেও পিছু হটেছে সরকার। কৃষি আইন ১২ থেকে ১৮ মাসের জন্য স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে তারা। কিন্তু বিরোধী দলগুলির বক্তব্য ওই আইন পার্লামেন্টারি সিলেক্ট কমিটিতে তোলা হোক।
বৃহস্পতিবার বিরোধী দলগুলির ১২ জন সাংসদ একত্রে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে একটি চিঠি জমা দেন। চিঠিতে লোকসভায় কৃষি আইন ও কৃষকদের বিক্ষোভ নিয়ে আলোচনার কথা বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার NDA জোটের নয় এমন ১৫ জন সদস্যকে কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে বাধা দেওয়া হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পরই পার্লামেন্টে এই চিঠি দেন বিরোধী সাংসদরা। এই সাংসদদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরাও।
চিঠিতে তাঁরা লিখেছেন, “দিল্লি গাজিপুর সীমান্তকে দেখতা লাগছে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের মতো। কৃষকরা যেন ওখানে জেলে বন্দি।” কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়া নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে এদিন সুপ্রিয়া সুলে, কানিমোজি, সৌগত রায় এবং তিরুচি শিভা সহ বিরোধী সংসদ সদস্যরা স্পিকার ওম বিড়লার কাছে প্রশ্ন তোলেন যে ভারত কি “পুলিশ রাজ্যে” পরিণত হয়েছে?
গাজিপুর সীমান্তে এদিন দেখা গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সৌগত রায়, এনসিপির সুপ্রিয়া সুলে, ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝি ও তিরুচি শিবা, এসএডি-র হরসিমরত কৌরের মত নেতা নেত্রীরা।
হরসিমরত কৌরের নেতৃত্বেই ১০টি বিরোধী দলের সাংসদ এদিন গাজিপুর সীমান্তে যান। এই দলে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স, আরএসপি ও আইইউএমএলের মতো দলের নেতারাও।
তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, এই আশংকায় দিল্লি উত্তরপ্রদেশ সীমান্তের গাজিপুরে নিরাপত্তার কড়াকড়ি করা হয়। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী।
মোট ১৫ জন নেতা যান সেখানে। তার আগেই গাজীপুর সীমান্ত অবরুদ্ধ করে রাখে পুলিশ। নিয়োগ করা হয় ৩১ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী ও ১৬ কোম্পানি ব়্যাফ। বিরোধী নেতাদের অভিযোগ কৃষক নেতাদের সঙ্গে তাঁদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি। খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে।
এদিকে, কৃষক বিক্ষোভ রুখতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্র। এবার কৃষক বিক্ষোভ ইস্যুতে কেন্দ্র নোটিশ ধরাল টুইটারকে। কৃষক বিক্ষোভ সংক্রান্ত হ্যাশট্যাগ সম্পর্কিত পোস্ট ও অ্যাকাউন্ট সরিয়ে নেওয়ার আদেশ দিল কেন্দ্র। এ ব্যাপারে ফাইনাল নোটিশ দিয়ে টুইটারকে কেন্দ্র জানিয়েছে নির্দেশ না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।