সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের মাধ্যমে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তা
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার ২০২১ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের মাধ্যমে নেওয়ার চিন্তা ভাবনা করছে।
এর পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ফেব্রুয়ারি মাসে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে পরীক্ষা ছাড়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশে সংসদে উত্থাপিত বিলের সংশোধনী ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর বিষয়ে সংসদ সদস্যদের প্রস্তাবের পর উত্তর দিতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এ তথ্য জানান।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলে এটি কার্যকর করা শুরু হবে। তবে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী চলতি শিক্ষাবর্ষের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দিতে চাচ্ছে না।
ডা. দীপু মনি বলেন, আগামী মাসে বা দুমাস পরে পেনডেমিক কোথায় কোন অবস্থায় থাকবে তা এখনো আমাদের বলবার সুযোগ আসেনি আর তা বলা উচিতও হবে না।
তবে যে তথ্য আছে তাতে দেখছি আমাদের দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের নিম্নগতি। এতে সরকারের বিরাট সাফল্য রয়েছে বলে আমি মনে করি।
কোনো এক সময় যদি আমরা সকুল কলেজ খুলে দিতে পারি তাহলে সেই সিলেবাসের ওপরে এসএসসির ক্ষেত্রে তিনমাস ও এইচএসসির ক্ষেত্রে চার মাস যদি অন্তত ক্লাস করাতে পারি তাহলে সেই সিলেবাসের ওপরে পরীক্ষা নিতে পারবো।
সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে এটা সম্ভব হয়েছে। সংক্রমণের রিয়েল টাইম বিচার বিশ্লেষণ করে সরকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের কোন জায়গায় শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছে, কোন জায়গায় ঘাটতি হচ্ছে।
আগামী শিক্ষাবর্ষে কী করে তা পুরণ করবো সমস্ত কিছুই বিবেচনায় নিয়ে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। যার ফলে আমরা নভেম্বর ডিসেম্বরের মধ্যে অ্যসাইনমেন্ট দিয়েছি।
আমরা এখন ঠিক করেছি এই শিক্ষাবর্ষে (চলতি ২০২১) কোথায় কোথায় কী ঘাটতি রয়েছে। সেটাকে কী করে পূরণ করবো? এই শিক্ষাবর্ষে আমরা কতদিন পেতে পারি সেটার ওপরও অ্যাসেসমেন্ট করছি।
এর পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য ন্যূনতম যে দক্ষতাগুলো অর্জন করতে হবে তা কারিকুলামের মাধ্যমে কতটুকু দিতে পারবো তা বিবেচনায় নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।
আমরা প্রতিদিন এসএমএস, ইমেইলসহ নানা ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে তথ্য পাচ্ছি তার ক্ষেত্রে আমরা এর উল্টোটা দেখতে পাচ্ছি।
তারা বলেন, আমাদের পরীক্ষা দিতে বলবেন না। তাদের অনেকেই এবারের (২০২১) এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষাও দিতে চায় না।
কাজেই এটি নিয়ে নানা রকমের মত আছে। অবশ্যই আমরা শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তাদের সকলকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করেই আমরা অগ্রসর হচ্ছি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা না নেওয়া গেলেও তাদের পরীক্ষার পূর্ণ প্রস্তুতিসহ সিলেবাস শেষ হয়ে গিয়েছিল।
এছাড়া চলতি বছরের (২০২১) যে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আছে তারা প্রায় একটি বছর সরাসরি ক্লাসে অংশ গ্রহণ করেনি। অনলাইন কিংবা টেলিভিশনে করেছে। এর একটি অংশ হয়তো একেবারেই বাইরে রয়ে গেছে।
এই সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা এবারের এসএসসি ও এইচএসসির একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করেছি। ইতোমধ্যে প্রণয়ন করে তা সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠানো হচ্ছে।
আর তার ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারি মাসের কোনো এক সময় যদি আমরা সকুল কলেজ খুলে দিতে পারি তাহলে সেই সিলেবাসের ওপরে এসএসসির ক্ষেত্রে তিনমাস ও এইচএসসির ক্ষেত্রে চার মাস যদি অন্তত ক্লাস করাতে পারি তাহলে সেই সিলেবাসের ওপরে পরীক্ষা নিতে পারবো।
কাজেই যারা পরীক্ষা না নিলে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে বলছেন আশা করি তারাও আশাবাদী হবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও এর পর আমরা বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নেবো।