ব্রাজিল-ইকুয়েডরের ‘কুংফু’ ফুটবল
ফুটবল খেলার ৯০ মিনিটের ধ্রুপদী লড়াইয়ে খেলোয়াড়দের দক্ষতা আর নৈপুণ্যের সঙ্গে সমানতলে চলে শারীরিক শক্তি প্রদর্শন। তাই ফুটবল আগ্রাসনের খেলা হিসাবে পরিচিত।
এই খেলায় কখনো ফাউলের সংখ্যা বেড়ে যায় অতিমাত্রায়। এমনই এক ‘কুংফু’ রূপের ফুটবল খেলা উপহার দিলো ইকুয়েডর-ব্রাজিল। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চললো ফাউলের বন্যা। পরিস্থিতি সামলাতে ৪ বার লাল কার্ড প্রদর্শন করেন ম্যাচ রেফারি। যার দুটিই দেখানো হয় ব্রাজিল গোলরক্ষক আলিসন বেকারকে!
এক খেলোয়াড়কে দুবার মাঠ থেকে বিতাড়িত করার উপায় না থাকলেও গতরাতের ম্যাচটিতে হয়েছে কিছুটা তাই। আগ্রাসী আলিসন দুবার কার্ড দেখলেও ভিএআরের সিদ্ধান্তে রক্ষা হয়েছে তার।
বৃহস্পতিবার রাতে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ইকুয়েডর-ব্রাজিল ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে।
সেলেসাওরা শুরুতেই কাসেমিরোর গোলে এগিয়ে যায়। শেষে ফেলিক্স তরেসের গোলে সমতায় ফেরে ইকুয়েডর।
ব্রাজিলের এমেরসন ম্যাচের প্রথম মিনিটেই মোইজেজ কাইসেদোকে বাজে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন। ৪র্থ মিনিটে কাসেমিরো ব্রাজিলকে লিড এনে দেন। এরপর বড় ধাক্কা খায় ইকুয়েডর। ১৫তম মিনিটে লাল কার্ডের খড়গে মাঠ ছাড়েন গোলরক্ষক আলেকজান্ডার ডমিঙ্গোজ।
একজন কম নিয়ে খেলা ইকুয়েডরের দুর্বলতার সুযোগ নেয়ার পরিবর্তে ব্রাজিলও পরিণত হয় ১০ জনের দলে। ২০তম মিনিটে ইকুয়েডরের এস্ত্রাদাকে পেছন থেকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন ডিফেন্ডার এমেরসন।
২৬তম মিনিটে বল দখলের মোকাবিলায় ইকুয়েডরের অধিনায়ক এনার ভ্যালেন্সিয়া মুখে গিয়ে লাগে ব্রাজিল গোলরক্ষক আলিসন বেকারের পা। সঙ্গে সঙ্গে লাল কার্ড দেখান কলম্বিয়ান রেফারি উইলমার রোলদান। পরে ভিএআরের সাহায্যে রক্ষা পান আলিসন। লাল কার্ড বদলে দেখানো হয় হলুদ কার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে আবারও ভিএআর নাটকীয়তা। ব্রাজিলের ডি-বক্সে রাফিনহার চ্যালেঞ্জে ইকুয়েডরের ডিফেন্ডার পেরভিস এস্তুপিনান পড়ে গেলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে ভিএআরের সিদ্ধান্তে কপাল পুড়ে ইকুয়েডরের।
৭৫তম মিনিটে সমতায় ফেরে সর্বশেষ ২০১৪ বিশ্বকাপ খেলা দলটি। গনসালা প্লাতার কর্নারে হেডে গোলটি করেন ফেলিক্স তরেস। পুরো ম্যাচে গোলের উদ্দেশ্যে দলটির ১০ প্রচেষ্টার এই একটিই ছিল লক্ষ্যে। আর ব্রাজিলের ১২ শটের লক্ষ্যে ছিল ৬টি।
নব্বই মিনিট শেষ। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিট চলছে। এসময় ফের লাল কার্ড দেখেন আলিসন। ইকুয়েডরের মিডফিল্ডার এরতন প্রেসিয়াদোর সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে বলকে পাঞ্চ করতে গিয়ে তার মুখে ঘুষি মেরে বসেন আলিসন। তবে ফের কলম্বিয়ান রেফারি রোলদানের লাল কার্ডের সিদ্ধান্ত পাল্টায় ভিএআরের সাহায্যে। ৩২ ফাউলের লড়াইয়ে ২০টিই ইকুয়েডরের। বাকি ১২টি করে ব্রাজিল।
ঘটনাবহুল ম্যাচ ড্র করে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে সর্বোচ্চ ৩১ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড স্পর্শ করলো ব্রাজিল। ১৯৫৪ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত সময়ে নিজেরাই রেকর্ডটি গড়েছিল পাঁচবারের বিশ্বকাপ জয়ীরা। ১৪ ম্যাচে ১১ জয় ও ৩ ড্রয়ে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে ব্রাজিল।১৫ ম্যাচে সাত জয় ও তিন ড্রয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ইকুয়েডর।