বাংলাদেশের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী মওদুদ আহমেদ সিঙ্গাপুরে মারা গেছেন
বাংলাদেশের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এবং সিনিয়র আইনজীবী মওদুদ আহমেদ মারা গেছেন। তিনি বিরোধী দল বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবীর বিবিসি বাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
১৯৪০ সালের ২৪শে মে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন মওদুদ আহমেদ। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি নানা রকম শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন।
সর্বশেষ তিনি সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে কিডনি ও ফুসফুস রোগে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং সেখানেই বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যে ৬.৩০ মিনিট নাগাদ মারা যান।
বাংলাদেশের বর্ণাঢ্য রাজনীতিবিদদের একজন ব্যারিস্টার আহমেদ দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট, সরকারের প্রধানমন্ত্রী, উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং আইন, সংসদ ও বিচার বিষয়কমন্ত্রী হিসেবে বিভিন্ন সময়ে দায়িত্ব পালন করেছেন।
অসুস্থ অবস্থায় গত ১লা ফেব্রুয়ারি তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছিল। শায়রুল কবীর জানিয়েছেন, মি. আহমেদের নরওয়ে প্রবাসী মেয়ে সিঙ্গাপুরে আসার পর পারিবারিকভাবে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা এবং তার দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মওদুদ আহমেদের স্ত্রী হাসনা মওদুদ তার সঙ্গে সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন এবং বর্তমানে তিনি সেখানেই রয়েছেন।
দলের শীর্ষস্থানীয় নেতার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “তার মৃত্যু দলের জন্য এবং বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি দলের একজন অভিভাবক হিসেবেও ছিলেন। তার মৃত্যুতে বিএনপি খুবই শোকাহত।”
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরও মি. আহমদের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন।
রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী মওদুদ আহমেদ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে অভিজ্ঞ একজন সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় মি. আহমেদ দেশের দুইটি রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে অন্যতম একজন আইনজীবী ছিলেন তিনি। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
পরে বিএনপি ছেড়ে দিয়ে তিনি সামরিক শাসক জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন এবং প্রধানমন্ত্রী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।