বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টিতেও ভাগ্য বদল হয়নি
বাংলাদেশের ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশের পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতেও ভাগ্য বদল হয়নি। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৬৬ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে সফরকারীরা। ২১১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশ ৮ উইকেট হারিয়ে করেছে ১৪৪ রান!
বাংলাদেশ হ্যামিল্টনে এমনই ম্যাচ খেলতে নেমেছিল, যেখানে একই দিন অভিজ্ঞ তিন ক্রিকেটার সাকিব, মুশফিক ও তামিমের কেউ ছিলেন না। ম্যাচের আগে চোট নিয়ে ছিটকে গেছেন মুশফিক।
এমন ম্যাচেই কিনা স্বাগতিকরা ছুঁড়ে দিয়েছে ২১১ রানের বড় লক্ষ্য। অথচ আগের হেরে যাওয়া চার টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানই ছিল ১৬৭! বড় লক্ষ্যের বিপরীতে খেলতে নেমে পাওয়ার প্লেতেই ৪ উইকেট হারায় সফরকারীরা।
নাঈম শেখের ব্যাটে শুরুটা আক্রমণাত্মকই ছিল। ছোট মাঠে মেরে খেলছিলেন এই ওপেনার। কিন্তু অপরপ্রান্তে লিটন দাস ছিলেন পুরোপুরি ব্যর্থ। তৃতীয় ওভারে সাউদির বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৫ রানে।
দারুণ শুরু করা নাঈমও বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। ৪.২ ওভারে ফার্গুসনের ফুলার লেন্থের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে তিনি বিদায় নেন ১৮ বলে ২৭ রান করে।
এর পর সেই চিরচেনা ব্যাটিং ব্যর্থতা। লেগ স্পিনার ইশ সোধিই কার্যত শেষ করেছেন সব সম্ভাবনা। ষষ্ঠ ওভারে প্রথম ওভার বল করতে এসে ফিরিয়েছেন সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ মিঠুনকে। সোধিকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ৫ রানে ফিরেছেন সৌম্য।
আর মিঠুন তো গুগলি বুঝতেই পারেননি। স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে পুরোপুরি বোল্ড হয়ে বিদায় নেন ৪ রানে। এক ওভার পর সোধি ফিরলে ব্যাটিং ধসেই পড়ে যায় বাংলাদেশ। একই ওভারে পর পর তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসানকে।
ধ্বংসস্তুপে এর পর জীবন পাওয়া আফিফ কিউইদের ওপর ঝড় তুলে খেললেও তা হারের ব্যবধান কমায় মাত্র। ৩৩ বলে ৪৫ রান করে ফিরেছেন এই তরুণ। আফিফের ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ১টি ছয়। আফিফকে বোল্ড করেছেন ফার্গুসন।
এর পর শরিফ ফিরলে বাংলাদেশ থামে ৮ উইকেটে ১৪৪ রানে। সাইফউদ্দিন ৩৪ বলে ক্রিজে ছিলেন ৩৪ রানে। কিউইদের হয়ে ২৮ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন সোধি। দুটি নিয়েছেন ফার্গুসন। একটি করে নেন টিম সাউদি ও হামিশ বেনেট।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড ৩ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছে ২১০ রান! শুরুটা ভালোই ছিল অভিষিক্ত স্পিনার নাসুম আহমেদের। প্রথম ওভারেই গোল্ডেন ডাকে ফেরান অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান ফিনকে।
এর পরও পাওয়ার প্লেতে কিউইদের রানের চাকা দিব্যি ছুটেছে। বিশেষ করে ওপেনার মার্টিন গাপটিলের ঝড়ো শুরুতে ৬ ওভারে আসে ৪৮ রান। তবে সপ্তম ওভারে বিপজ্জনক গাপটিলকে ফিরিয়ে আবারও কিউইদের রাশ টেনে ধরার চেষ্টা করেছিলেন নাসুম।
গাপটিল তালুবন্দি হন ২৭ বলে ৩৫ রান করে। তাতে ভাঙে গাপটিল-কনওয়ের ৫২ রানের জুটি। তাতেও কিউইদের রান চাকা থেমে থাকেনি। কনওয়ের বিধ্বংসী ইনিংসে রানের পাহাড় গড়ে স্বাগতিকরা। ৫২ বলে ৯২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তাতে ছিল ১১টি চার ও ৩ ছয়। ম্যাচসেরাও হন তিনি।
ঝড় তোলা কনওয়েকে সঙ্গ দেন অভিষেক হওয়া আরেক ব্যাটসম্যান ইউল ইয়ং। কনওয়ের সঙ্গে গড়েছেন ৬০ বলে ১০৫ রানের জুটি! হুমকি হয়ে দাঁড়ানো এই জুটি ভাঙেন মেহেদী। তার বলে আফিফের হাতে ক্যাচ দেন ইয়ং। ততক্ষণে অবশ্য ৩০ বলে ৫৩ রান তুলে ফেলেছিলেন তিনি। তাতে ছিল ৪টি ছয় ও ২টি চার।
পরে বড় স্কোর গড়তে কনওয়েকে সঙ্গ দিয়েছেন গ্লেন ফিলিপস। ১০ বলে ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে ৩০ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন নাসুম। একটি মেহেদী হাসান। অভিষেক হওয়া শরিফুল ৪ ওভারে ৫০ রান দিলেও উইকেট পাননি কোনও। ৪৮ রান দিয়েছেন মোস্তাফিজ, উইকেট শূন্য ছিলেন তিনিও।