ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির কার্যালয় বন্ধ, হটলাইন নম্বরে মিলছে না সাড়া
ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির কার্যালয়টি বন্ধ রাখা হয়েছে। যে কোনো বিষয় জানতে হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হলেও সেখানে ফোন করেও কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন গ্রাহকেরা।
এতে উদ্বিগ্ন হয়ে গ্রাহকরা প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে ভিড় করছেন। কিন্তু সেখানে এসেও কারো সাথে কথা বলতে পারছেন না। ফলে লগ্নি করা অর্থ আর পণ্য পেতে তাদের উৎকণ্ঠা আরও বাড়ছে।
ইভ্যালির কার্যালয়ে টানানো নোটিশে বলা হয়েছে, ইভ্যালির সশরীর গ্রাহকসেবা বন্ধ থাকবে। অনলাইন গ্রাহকসেবা ও পণ্য সরবরাহ চালু থাকবে। অবশ্য সে নোটিশে কারও স্বাক্ষর ও তারিখ নেই।
গণমাধ্যমকে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল জানিয়েছেন, করোনার কারণে কর্মীদের একটা অংশ বাসা থেকে কাজ করার ফলে কার্যালয়টি বন্ধ আছে। পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল বলেন, সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কলসেন্টার খোলা আছে।
এদিকে ইভ্যালির কাছ থেকে পণ্যের দাম না পাওয়ার কথা জানিয়ে ইতোমধ্যে পোশাকের ব্র্যান্ড জেন্টল পার্ক, ট্রেন্ডস, আর্টিসানসহ আরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান সম্পর্ক ছিন্ন করছে। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের গ্রাহককে খুদে বার্তার মাধ্যমে জানিয়ে দিচ্ছে, ইভ্যালির দেওয়া ভাউচারে তারা আর পণ্য সরবরাহ করবে না। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন গ্রাহকরা।
ফয়সাল হোসেন নামে এক গ্রাহক বলেন, গত চার মাসে তিনি প্রায় ৮ লাখ টাকার মতো পুঁজি লগ্নি করেছেন। এর আগেও কিছু পণ্য পেয়েছেন, ফলে এবার লগ্নি বেশি করেছেন। এখন যদি প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে বেশ বিপাকে পড়ে যাবেন তিনি।
ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল সার্বিক বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থাও চালু আছে। দু’একটি ঘটনা ছাড়া গ্রাহকরা সময়মতো তাদের পণ্য হাতে পাচ্ছেন। কল সেন্টারে ফোন করে না পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিদিন অনেক ফোন আসে। কেউ হয়তো একটা নির্দিষ্ট সময়ে ব্যস্ত পেয়েছেন। তাই বলে এটাকে তো না পাওয়া বলা যায় না।
সম্প্রতি কার্ডের মাধ্যমে ইভ্যালিসহ আরও বেশ কয়েকটি ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানে লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে ব্র্যাক, সিটিসহ বেশ কটি ব্যাংক। আর ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মনীতির মধ্যে আনতে গত ৪ জুলাই প্রথমবারের মতো ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই দিন থেকেই তা কার্যকর।
এতে বলা হয়, ক্রেতা-বিক্রেতা একই শহরে অবস্থান করলে ক্রয় আদেশ দেওয়ার ৫ দিনের মধ্যে, ভিন্ন শহরে থাকলে ১০ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ করতে হবে। পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হলে, মূল্য পরিশোধের ১০ দিনের মধ্যে ক্রেতার পুরো টাকা ফেরত দিতে হবে। ওই নির্দেশিকা জারির পর এখন গ্রাহকের পণ্যের ক্রয়াদেশের বিপরীতে সরাসরি অর্থ পাচ্ছে না ইভ্যালিসহ কোনো ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানে।
অন্যদিকে পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকেও পাওনা টাকা দিতে পারছে না। এ অবস্থায় কয়েক দিন ধরেই পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাংকে চেক জমা না দিতে অনুরোধ করছে ইভ্যালি। মার্চেন্টদের পাঠানো খুদে বার্তায় তারা বলছে, ইভ্যালির হিসাব বিভাগ থেকে বলছি। ইভ্যালি থেকে যে চেক দেওয়া হয়েছে, তা ব্যাংকে এখন জমা দেবেন না। কবে জমা দেবেন, কলসেন্টার থেকে কল দিয়ে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। ওই দিনই আপনার চেকের টাকা ব্যাংকে দেওয়া থাকবে।