হ্যাকপ্রুপ লেজার টকি আবিষ্কার করে তাক লাগালেন ঢাকার যুবক:
অনন্য এক আবিষ্কার করেছেন ঢাকার অন্তর্মুখী এক যুবক। তার এ আবিষ্কারের নাম হ্যাকপ্রুপ লেজার টকি। এর মাধ্যমে তার ছাড়াই কথা বলা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে লাগবে আলোর সাহায্য।
এর ফলে আলো যতদূর পৌঁছবে, হ্যাকপ্রুপ লেজার টকির সাহায্যে ততদূর তার ছাড়াই যোগাযোগ করা সম্ভব হবে। এই ডিভাইস আবিষ্কারের ফলে ঝড়-ঝঞ্জা, সাইক্লোনকবলিত এলাকার লোকজনের উপকার হবে।
প্রাকৃতিক দূর্ঘটনা পর তথা ঝড়-সাইক্লোনের পর যেসব জায়গায় বা এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ও টেলিফোন লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে হ্যাকপ্রুপ লেজার টকির সাহায্যে পুনরায় যোগাযোগ করা যাবে।
তাছাড়া পাহাড়ি এলাকা যেখানে নেটওয়ার্ক দুর্বল, সেখানে এই ডিভাইসের সাহায্যে সহজে যোগাযোগ করা যাবে। এ ছাড়া যারা গভীর সাগরে মাছ ধরতে যান, তাদের ক্ষেত্রে যোগাযোগে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
হ্যাকপ্রুপ লেজার টকির আবিষ্কারক সাদ্দাম উদ্দিন আহমদ। ময়মনসিংহে জন্ম নেওয়া এই যুবক থাকেন ঢাকার ওয়ারীতে। চাকরি করেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। পড়ালেখা করেছেন ভারতের ব্যাঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে ব্যাচেলর ডিগ্রি করে দেশে ফিরে কাজ শুরু করেন তিনি।
যুবক সাদ্দাম উদ্দিন ওয়ারীর বাসায় নীরবে বহু কিছু নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন সাধনার পর আবিষ্কার করেন হ্যাকপ্রুপ লেজার টকি।
তার নিজের আবিষ্কার নিয়ে সাদ্দাম উদ্দিন আহমদ বলেন, করোনাকালে সময়কে কাজে লাগিয়ে আমি এই ডিভাইসটি আবিষ্কার করেছি। হঠাৎ একদিন ছোট্ট মেয়েটার সঙ্গে কী নিয়ে খুঁনসুটি করার সময় মনে হলো এই ডিভাইসটি তৈরি করা যেতে পারে। আর এই চিন্তা থেকেই এ কাজ। অনেকটা খেলার ছলেই হ্যাকপ্রুপ লেজার টকি আবিষ্কার করেছি, বলতে পারেন।
সাদ্দম এটি নিয়ে গবেষণা করার সময় কার্যকরিতা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। ডিভাইস তৈরির পর তিনি বুঝতে পারেন যে, এটি বহু কাজে লাগতে পারে। তার সৃষ্টি মানবকল্যাণে কাজে লাগলেই তৃপ্তি পাবেন বলে জানান তিনি।
হ্যাকপ্রুপ লেজার টকিকে উদ্ভাবন বলবেন নাকি আবিষ্কার বলবেন, এমন প্রশ্নে অনেকটা চাপা স্বভাবের সাদ্দামের ভাষ্য— এটি আবিষ্কার না উদ্ভাবন সেটি বড় কথা নয়; তবে আমার জানামতে, এমন ডিভাইস আর কেউ তৈরি করতে পারেননি।
হ্যাকপ্রুপ লেজার টকি কীভাবে কাজ করবে, এমন প্রশ্নের জবাবে সাদ্দাম বলেন, হ্যাকপ্রুপ লেজার টকিতে থাকে ট্রান্সফরমার। সঙ্গে থাকে রিসিভার। সেই সঙ্গে টর্চলাইট কিংবা লেজার লাইট লাগবে। লাইটের আলো ট্রান্সফরমারে যতদূর গিয়ে পড়বে ততদূর শব্দ পৌঁছাবে। এ ক্ষেত্রে দুজনের কথোপকথনের জন্য কোনো তার লাগবে না।
তিনি আরও বলেন, এই ডিভাইস টর্চলাইটে লাগানো থাকলে বহুদূর থেকে সহজেই যোগাযোগ করা যাবে। বিশেষ করে গভীর সমুদ্রে যারা মাছ ধরতে যান, তারা অন্ধকার রাতে বহুদূর থেকে তার ছাড়াই যোগাযোগ করতে পারবেন।
তাছাড়া যেই সব এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক কাজ করে না, সেই সব এলাকার লোকজন অল্প খরচে এই যন্ত্র ব্যবহার করে জরুরি যোগাযোগ সারতে পারবেন। ঘরবাড়ি ধসে পড়লে ধ্বংসস্তূপের ভেতরে অন্ধকারে এই যন্ত্র দিয়ে উদ্ধারকর্মীরা যোগাযোগ করতে পারবেন।
খবর নিয়ে জানা গেছে, সাদ্দাম উদ্দিন আহমদের এটিই প্রথম আবিষ্কার নয়; এর আগে তিনি কৃত্রিম হাত উদ্ভাবন করেছেন। যেটির সাহায্যে দৈনন্দিন কাজ করা যাবে। যাদের হাত কাটা গেছে কিংবা হাত অকেজো, তারা কৃত্রিম হাতের সাহায্যে কাজ করতে পারবেন।
তাছাড়া যেই সব কাজ হাত দিয়ে করা ঝুঁকিপূর্ণ, সেগুলো কৃত্রিম হাতের মাধ্যমে করা যাবে। বডি কন্ট্রোল সুইচের মাধ্যমে পরিচালিত হবে এই হাত।
সাদ্দাম উদ্দিন আহমদপর আবিষ্কারের মধ্যে আরও রয়েছে- রোবট ট্রলি, যেটি রিমোট দিয়ে পরিচালিত হবে। এ ছাড়া পানি ঠাণ্ডা করার পাত্র আবিষ্কার করেছেন তিনি। চার্জারের সাহায্যে মোবাইল থেকে চার্জ দিয়ে পানি ঠাণ্ডা করা যাবে। খবর- দৈনিক যুগান্তর