ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনার টিকা নিতে উপচেপড়া ভীড়
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে চলছে দ্বিতীয় দফায় আবারও লকডাউন। এরইমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলায় করোনার টিকা নিতে আগ্রহী সংখ্যা বাড়ছে। এতে টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। বেশিরভাগের মুখে মাস্ক থাকলেও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। এর থেকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত জেলার ৯টি উপজেলায় ভ্যাকসিনের জন্য রেজিষ্ট্রেশন করেছেন ৮২ হাজার ০৬৯ জন।
এখন পর্যন্ত জেলার ৯টি উপজেলায় ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৬৮ হাজার ৪৬ জন ও দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২১ হাজার ৫২৬ জন।
প্রথম ডোজ নিয়েছেন সদর উপজেলায় ১৯ হাজার ১৮৯ জন, কসবা উপজেলায় ৬ হাজার ১৪ জন, নাসিরনগর উপজেলায় ৮ হাজার ২৩৮ জন, বিজয়নগর উপজেলায় ৩ হাজার ৯৬৫ জন, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ৬ হাজার ১৪ জন, নবীনগর উপজেলায় ১০ হাজার ৫১৮ জন, সরাইল উপজেলায় ৪ হাজার ৮১১ জন, আখাউড়া উপজেলায় ৩ হাজার ১৪১ জন ও আশুগঞ্জ উপজেলায় ৬ হাজার ১৫৩ জন।
দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন সদর উপজেলায় ৮ হাজার ৪৬২ জন, কসবা উপজেলায় ১ হাজার ৩৬৭ জন, নাসিরনগর উপজেলায় ১ হাজার ১৭৯ জন, বিজয়নগর উপজেলায় ১ হাজার ১২৬ জন, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ১ হাজার ৪১৪ জন, নবীনগর উপজেলায় ২ হাজার ১৩৯ জন, সরাইল উপজেলায় ২ হাজার ২৬৬ জন, আখাউড়া উপজেলায় ১ হাজার ৪০৭ জন ও আশুগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ১৬৬ জন।
শনিবার দুপুর ২টার দিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় ও তৃতীয় তলায় স্থাপিত টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে টিকা নিতে আগ্রহীদের দীর্ঘ লাইন। তবে তুলনামূলকভাবে মহিলা টিকাদান কেন্দ্রে বাহির ও ভেতরে প্রবেশ করতেই উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। ভ্যাকসিন গ্রহণের আগে কার্ড নিয়ে যেতে হয় ডাটা এন্ট্রি করতে। সেখানেও মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। ডাটা এন্ট্রি হলেই টিকার জন্য ডেকে দেয়া হচ্ছে কার্ড। এর তদারকি করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ।
ভিড়ে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আছে কিনা জানতে চাইলে সিভিল সার্জন একরাম উল্লাহ বলেন, সামাজিক দূরত্ব না থাকলে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি অবশ্যই থাকে। যে কেউ আক্রান্ত হতে পারে।
তিনি বলেন, এখন সবচেয়ে ভাল খবর হচ্ছে টিকা নিতে আগ্রহী সংখ্যা বাড়ছে। টিকা নিতে আসা পুরুষের চেয়ে মহিলার সংখ্যা বেশি।
টিকাদান কাজটি রেড ক্রিসেন্টের ভলান্টিয়ার দিয়ে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চেষ্টা করছি। এরপরও অনেকে জোরপূর্বক এসে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা চেষ্টা করছেন। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা চেয়েছি। তারা আমাদের সহায়তা করবে।
এখন পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোভিড ভ্যাকসিনের জন্য রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে ৮২ হাজার ৬৯ জন। এখন পর্যন্ত কোভিড ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৬৮ হাজার ৪৬ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় নতুন ৬০ জনের রিপোর্টে ৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এখন পর্যন্ত ৩৪৮৭ জন আক্রান্তের মধ্যে ২৯২৫ জন সুস্থ হয়েছেন। কিন্তু এখনো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫১০ জন রোগী আইসোলেশনে আছে ও সেলফ আইসোলেশনে ৫০২ জন আছে। প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে চিকিৎসা পাচ্ছে ৮ জন রোগী।
এখন পর্যন্ত জেলায় ২৮৯৩৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে৷ যার মধ্যে পাওয়া ২৮৭২৩ জনের করোনা ভাইরাসের রিপোর্টে জেলায় সর্বমোট ৩৪৮৭ জন আক্রান্ত হয়েছে৷